গত তিন বছরে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখাগুলির ধারাবাহিকভাবে হ্রাস এবং বেসরকারি খাতের শাখাগুলির দ্রুত বৃদ্ধি ঘটেছে।
সরকার রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে তার শেয়ার হোল্ডিং কমিয়ে ৫২ শতাংশ করার অনুমোদন দিয়েছে। ব্যাঙ্কস বোর্ড ব্যুরো গঠন এবং পরবর্তীকালে একটি হোল্ডিং সংস্থা গঠনের জন্য যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে যেটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলিতে সরকারি বিনিয়োগের বিলিব্যবস্থা করবে। এগুলিই বেসরকারিকরণের দিকে প্রথম পদক্ষেপ।
পি জে নায়েক কমিটির অংশীদারিত্বকে হ্রাস করে ৪০ শতাংশ করার সুপারিশ সরকার গ্রহণ করেছে। অতীতে সরকারগুলি আইসিআইসিআই-কে বেসরকারিকরণ করে বেসরকারি ব্যাঙ্ক করেছিল, যদিও আইসিআইসিআই শিল্প নির্মাণে উৎসাহ দেবার জন্যে শুরু হয়েছিল। ইউটিআইকে ইউটিআই ব্যাঙ্কে এবং তারপরে অ্যাক্সিস ব্যাঙ্ক হিসাবে রূপান্তরিত করে বেসরকারিকরণ করা হয়েছিল। এইচডিএফসি, যা আবাসন ক্ষেত্রকে উন্নীত করার জন্য চালু করা হয়েছিল তা বেসরকারি সেক্টরে এইচডিএফসি ব্যাঙ্কে পরিণত হয়েছে। এখন সরকার ঘোষণা করেছে আইডিবিআই ব্যাঙ্কের সরকারি অংশীদারিত্ব হ্রাস করে ৪৫ শতাংশে নামিয়ে আনবে।
মেক ইন ইন্ডিয়া, স্বচ্ছ ভারত, ডিজিটাল ইন্ডিয়া পেনশন যোজনা এবং স্টার্ট আপগুলিকে সফল করতে হলে রাষ্ট্রায়ত্ত ক্ষেত্রের ব্যাঙ্কগুলিকে এদের তহবিল সরবারহ করতে হবে। বেসরকারি ক্ষেত্র কখনই এই প্রকল্পগুলিকে তহবিল দেয় না কারণ এগুলি তাৎক্ষণিক মুনাফা অর্জন করবে না এবং ব্যর্থও হতে পারে। কৃষকদের যদি কৃষি ঋণ পেতে হয়, যদি ক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগগুলিকে পর্যাপ্ত ঋণ পেতে হয়, আমাদের সন্তানদের যদি শিক্ষা ঋণ নিতে হয় এবং স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে ঋণ পেতে হয়, আমাদের সন্তানদের যদি শিক্ষা ঋণ নিতে হয় এবং স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে ঋণ পেতে হয়, তবে কেবলমাত্র রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলি তা সরবারহ করতে পারে। সুতরাং আসুন রাষ্ট্রায়ত্ত ক্ষেত্রের ব্যাঙ্কগুলিকে সমর্থন করি। রাষ্ট্রায়ত্ত ক্ষেত্রের ব্যাঙ্কগুলি বাঁচান এবং তাদের সুরক্ষার জন্যে এগিয়ে আসুন। উন্নয়ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান স্থাপনের দাবি করুন।
**********************************************
এখন এনডিএ সরকারের দ্বিতীয় অবতার সবকিছুই বেসরকারি করতে চায়, কৃষকদের বীজ বিক্রি করতে বাধ্য করা বা মঙ্গলসূত্র বিক্রি করতে কোনও ভদ্রমহিলাকে বাধ্য করার মতোই সব তারা জ্বলাঞ্জলি দেবে প্রাইভেটের সেবায়।
দেশের সম্পদ, রাষ্ট্রায়ত্ত ক্ষেত্র সব তুলে দিতে চায় দেশ এবং বিদেশের বৃহদাকার কর্পোরেটদের হাতে। এদের মদতেই এনডিএ ক্ষমতায়।
কয়েকটি সাম্প্রতিক সংবাদ প্রতিবেদনের দিকে তাকান :
* রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড বিমান জ্বালানি বিক্রির জন্য ভারত পেট্রোলিয়ামের সাথে চুক্তি স্বাক্ষর করছে।
* এনটিপিসি বেসরকারি হতে চলেছে।
* সরকারের বিলগ্নিকরণের তাড়ায় তালিকায় ফিরে এল এলআইসি'র নাম।
* ৪০০০০ ঘর নির্মাণের ভার এনবিসিসি'র কাছে হস্তান্তর করার জন্য সুপ্রিম কোর্টের রায় কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রায়ত্ত ক্ষেত্রের বিশাল অবদানের স্বীকৃতি।
* শীঘ্রই আসছে। দ্য গ্রেট সরকারি সেল - পাওয়ার গ্রিড, গেইল, বিএসএনএল এবং এমটিএনএল, সাথে জমিও পাওয়া যাবে।
* সরকার সম্পূর্ণভাবে এয়ার ইন্ডিয়া থেকে হাত গুটিয়ে নেবার পরিকল্পনা করছে।
* কৃষ্ণপট্টম বন্দরের ৭০ শতাংশ শেয়ার কিনতে প্রস্তুত হয়ে আছে আদানি।
* রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের সেবায় এলআইসি'র ১৭০০০ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে।
* ভারতীয় নৌসেনার ৪৫০০০ কোটি টাকার সাবমেরিন প্রকল্পের শেষ মুহূর্তের পরীক্ষার জন্যে আদানি গ্রুপের প্রস্তুতি।
* পাবলিক সেক্টর ইউনিটগুলিতে শেয়ারের হোল্ডিং ৫০%-এর নিচে হ্রাস করার পরিকল্পনা নিচ্ছে সরকার।
গোটা দেশটাই কর্পোরেট, ভারতীয় ও বহুজাতিক সংস্থাগুলির কাছে বিক্রি হওয়ার মুখে। এর সাথে সংরক্ষণ নীতিও খতম হবে।
**********************************************
No comments:
Post a Comment