উপনিবেশি আসামে শ্রমজীবীদের প্রব্রজন অনবরত হয়ে চলেছে। মোটের ওপর তিনটে ভাগে ফেলা যায়।
১। সরকার চালানোর জন্য চাই অফিসের বড়বাবু, মেজবাবু, ছোটবাবু, কেরানি, পিওন, আর্দালিদের দঙ্গল। বৃটিশ ফৌজের সাথে আছে নানা স্তরের কলমচি, ছোট সরকারি চাকুরে। বিচারব্যবস্থার সাথে যুক্ত পেশাদারেরা - বিচারক, উকিল, মোক্তার, কেরানি। আছে রসদ যোগানদারেরা, মানে সাপ্লায়ার ও ব্যবসায়ীরা। কলমচি ও ব্যবসায়ীর দল বৃটিশদের পেছন পেছন ব্রহ্মপুত্র উপত্যকার বসতি পত্তন করে। এর মধ্যে বাঙালি, মারোয়াড়ি বা অন্য ভাষাভাষিরা পড়বেন। বাঙালি বলতে হিন্দু বাঙালি। ইংরেজদের চালু করা শিক্ষা বাকিদের তুলনায় হিন্দু বাঙালিদের মধ্যে বেশি ছড়িয়েছিল। রাজস্বের খাতিরে ১৮৭৪ সালে সিলেট জেলাকে পূর্ববঙ্গ থেকে কেটে আসামের সাথে জুড়ে দেওয়া হয়। লেখাপড়া জানা হিন্দু বাঙালির ঠাটবাট বাড়ে।
২। দুই নম্বর প্রব্রজন শুরু হয় চা বাগানগুলো ফুলেফেঁপে ওঠার পর। ১৮৩০-এর দশকে প্রথম চা বাগান পত্তন হয়। প্রথম দিকে চা শ্রমিকদের চীন থেকে আনা হত। চা চাষ, চা পাতা থেকে পানীয়যোগ্য চা তৈরি করার কৌশল চীনারাই জানত সে যুগে। উৎপাদন বাড়ার সাথে সাথে শ্রমিকের প্রয়োজন বাড়ে, স্থানীয় শ্রমিকদের নিয়োগ চালু হয়। বোড়ো কসারি জনজাতিদের দিয়ে কাজ করানো হত। কিন্তু বাগান মালিকেরা অচিরেই ফাঁপরে পড়লেন। জনজাতি মানুষেরা স্থায়ী বসবাসে অভ্যস্ত হননি, তাঁদের এক জায়গায় বেশিদিন থাকার অভ্যাস নেই। তার ওপরে জনজাতি মানুষদের জনসংখ্যা অপ্রতুল। বিকল্পের সন্ধান চলল। অবশেষে শ্রমিক আমদানি করা শুরু হল। ১৮৫০-এর দশক থেকে ভিন রাজ্য থেকে ব্যাপক মাত্রায় চুক্তি শ্রমিক আমদানি আরম্ভ হল। ভারত ভূখন্ডের সবচেয়ে গরিব অঞ্চলগুলো থেকে আড়কাঠি লাগিয়ে, ঠকিয়ে, লোভ দেখিয়ে, আগাম ধার দিয়ে, চা-শ্রমিকদের আনা হত। ছোটনাগপুর মালভূমি অঞ্চল থেকে সাঁওতাল, ওঁরাও, গোন্ডদের স্রোত বিশ শতক পর্যন্ত চলেছে।
"চল মিনি আসাম যাব, দেসে বড় দুখ রে..."
কাজের লোভে, রোজগারপাতির প্রতিশ্রুতিতে বহু মিনি-র দরিদ্র প্রেমিক অচেনা 'আসাম দেসের' দিকে পা বাড়িয়েছিল। তারপর কী হল গানে নেই। আছে অন্য এক বাগানিয়া গানে। ১৯৭০-এর দশকে বেরোনো 'চামেলি মেমসাহেব' সিনেমা দেখেছেন? অসমিয়া ও বাংলা দুই ভাষাতে 'চামেলি মেমসাব' বা 'চামেলি মেমসাহেব' বেরিয়েছিল। লোকগানের সুরে ভূপেন হাজরিকা সাজিয়েছিলেন মজদুর চামেলির সাথে বাগানের সাহেবের অসম ভালবাসার গল্প।
"সর্দার বলে কাম কাম
বাবু বলে ধরি আন
সাহেব বলে লিব পিঠের চাম
... ফাঁকি দিয়া আনিল আসাম।"
সর্দার জনজাতি। সাহেব, মানে বাগানের মালিক বা ম্যানেজার, গোরা ইউরোপীয়। আর বাবুরা প্রায়ই বাঙালি বা অসমিয়া ভদ্রলোক হত। শোষণের তিন পরতের চাপ একদম নিচের মহলের চা মজদুরেরা পিঠে সইত আর বইত।
অজানা দেশে জঞ্জল কেটে চা বাগানের পত্তন করে, ম্যালেরিয়া কালাজ্বরের সাথে পাঞ্জা লড়ে, মালিকের চাবুক খেয়ে দিন গুজরান সহজ নয়। অনেক শ্রমিক পালিয়ে যেত। বলা ভাল পালানোর চেষ্টা করত, কেননা বিদেশ বিভুঁইয়ে পালিয়ে বেশিদূর যাওয়া শক্ত। ধরা পড়লে কপালে জুটত কড়া সাজা। দ্বিতীয় স্রোতের অভিবাসীদের নাম হালে দেওয়া হয়েছে চা-জনজাতি গোষ্ঠী।
৩। ওপরের দুই ধরণের প্রব্রজনের ঠেলায় ব্রহ্মপুত্র উপত্যকার জনবিন্যাস বদলে যায়। ১৮৯১ সালের জনগণনাতে দেখা যাচ্ছে ব্রহ্মপুত্র উপত্যকার চারজনের মধ্যে একজন বহিরাগত। তাদের পূর্বপুরুষ বা তারা বাইরে থেকে এসেছে। প্রব্রজনের তিন নম্বর ঢেউ পূর্ববঙ্গ থেকে আসে। চা শ্রমিকদের আনা হয়েছিল চা কোম্পানির মুনাফার স্বার্থে, পূর্ববঙ্গের চাষি প্রব্রজনের পেছনে ছিল সরকারের কর তোলার খাঁই।
প্রথমত, আসামে জমির অভাব ছিল না। অভাব ছিল মানুষের, যারা জমিকে চাষের আওতায় এনে সরকারকে খাজনা দেবে। 'ওয়েস্টল্যান্ড' বা অনাবাদি জমি নিয়ে সরকারের দুশ্চিন্তা প্রথম থেকেই ছিল। জমি এমনি খালি পড়ে আছে, বসতি নেই, সরকারকে খাজনা দেওয়ার লোক নেই, এই ঘটনাটাই বরদাস্ত করা যাচ্ছিল না।
দ্বিতীয়ত, জমির জন্য চাহিদা ছিল। বিশ শতকের শুরুতে বাংলায় দুটো ঘটনা ঘটে যা জমির চাহিদা বাড়িয়ে দেয়। (ক) কলকাতার আশেপাশে চটকল গড়ে ওঠে। আগে বাংলা থেকে, বিশেষত পূর্ববাংলা থেকে, কাঁচা পাট রপ্তানি হত সাগরের ওই পারে বৃটেনের চটকলে। উনিশ শতকের শেষ দিকে ভারতের মাটিতেই চটকল তৈরি হতে থাকে। হুগলী নদীর দুই পারে চটকলগুলো গজিয়ে ওঠে। খালি ইউরোপীয় মালিকানায় নয়, দেশীয় পুঁজিপতিরাও, মারোয়াড়িরা, চটকল স্থাপনে অগ্রণী ভূমিকা নেয়। ভারত থেকে পাটসামগ্রীর রপ্তানি বাড়তে থাকে, ফলে আরো চটকল গড়ে ওঠে, কাঁচামালের চাহিদা তাল মিলিয়ে বাড়তে থাকে। (খ) বিশ শতকের শুরুতে পূর্ববঙ্গের পাট উৎপাদনের জমি শেষ হয়ে আসে। পূর্ববঙ্গ এমনিতেই জনবহুল কৃষিপ্রধান অঞ্চল। এই জমি চটকলগুলোর খিদে মেটাচ্ছিল। জমি শেষ হয়ে আসার ফলে উপনিবেশি প্রভুরা নতুন জমির সন্ধান করতে থাকেন।
আসামের নদী অববাহিকার নিচু, পলিমাটি পাটচাষের জন্য উপযুক্ত। তাই দেখা গেল আসামে অনাবাদি জমির যোগান ও তার জন্য চাহিদা দুটোই ছিল। জমিনের সাথে দরকার ছিল মানবের। এই ঘাটতি পূরণের জন্য পূর্ববঙ্গীয় চাষিদের দিয়ে বসতি পত্তন শুরু হয়। প্রব্রজনকারীরা ছিলেন আর্থিক দিক দিয়ে গরিব, পেশায় ভূমিহীন বা প্রান্তিক চাষি, ধর্মে মুসলমান।
পথ দেখান গোয়ালপাড়ার জমিদারেরা। ব্রহ্মপুত্রের চর ও নদের পাশের নিচু অঞ্চলগুলোকে অসমিয়াতে 'চর-চাপরি' বলে। সাধারণত কেউ সেখানে বসবাস করত না। পূর্ববঙ্গের চাষিদের দিয়ে জমি আবাদ করানোয় গোয়ালপাড়ার জমিদারেরা উৎসাহ দিচ্ছিলেন। বৃটিশ সরকারের আগ্রহে প্রব্রজনের স্রোত উপত্যকার পশ্চিম দিক থেকে পূর্ব দিকে এগোতে থাকে। ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গ হয়, পূর্ববঙ্গকে কেটে আসামের সাথে জুড়ে দেওয়া হয়। ফলে পূর্ববঙ্গ থেকে প্রব্রজনের ঢেউ আরো জোরদার হয়ে ওঠে। ১৯৩০-৪০-এ একাধিক মুসলিম লীগ সরকার আসামে চলার সময়ে প্রব্রজনের স্রোত বেড়েছিল বলে অনুমান। স্বাধীনতার পর কয়েক দশক ধরে পাকিস্তানে অস্থির রাজনৈতিক অবস্থা চলছিল। অর্থনীতির হালও বলার মত নয়। দরিদ্র শ্রমজীবীদের প্রব্রজন দেশভাগের পরও চলতে থাকে। প্রব্রজনকারীদের প্রধানভাগ মুসলমান, ফলে আসামের জনসংখ্যায় মুসলমান ভাগ বাড়তে থাকে। ১৮৭৪ সালে ব্রহ্মপুত্র উপত্যকার মাত্র ৫.৯% জনসংখ্যা মুসলমান ছিল। ১৯৪১ সালে বেড়ে হয় ২৩%। ২০১১ সালের জনগণনা বলছে আসামের জনসংখ্যার ৩৪% মুসলমান।
১৯০১ সাল থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত ফি দশকে আসামের জনসংখ্যার গতি ভারতের থেকে বেশি। শুধু বেশি না, অনেকটাই বেশি। আন্দাজ করা যায়, আসামে ওই সাত দশক জুড়ে প্রব্রজন হয়ে চলেছে। ১৯৭১-এর পর অবশ্য দেখা যায় আসামের জনসংখ্যার গতি কমে গেছে, ভারতের থেকে ঢিমে তালে বেড়েছে।
এখানে দু'টো কথা মনে রাখা ভাল। এক, প্রব্রজন শুধু পূর্ববঙ্গ ও পূর্ব পাকিস্তান থেকে হয়েছে এমন নয়। ভারতের অন্য রাজ্য থেকে প্রব্রজন হলেও আসামের জনসংখ্যা ভারতের থেকে বেশি হারে বাড়বে। দুই, পূর্ববঙ্গ বা পূর্ব পাকিস্তান থেকে যত প্রব্রজন হয়েছে, তার পুরোটা মুসলমান নয়। দেশভাগের সময় হিন্দু উদ্বাস্তুদের স্রোত আসামে এসেছে। দেশভাগের পরে পূর্ব পাকিস্তানে হিন্দুদের ওপর অত্যাচারের ফলে দফায় দফায় মানুষের ঢেউ এপারে এসেছে। পাকিস্তানের গৃহযুদ্ধের সময়ে প্রায় এক কোটি উদ্বাস্তু ভারতে আশ্রয় নেন। ভারতের পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নেমে পড়ার কাগজেকলমে কারণ উদ্বাস্তু প্রবেশ। বাংলাদেশের জন্মের পর সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচার থেমে যায়নি। 'শত্রু সম্পত্তি' বাজেয়াপ্ত করার আইন বাংলাদেশে আছে। হিন্দুদের সম্পত্তি কতখানি সুরক্ষিত তার ওপর প্রশ্নচিহ্ন আছে। সাথে আছে ছুটকো-ছাটকা দাঙ্গা। বাবরি মসজিদ ধ্বংসের দাঙ্গা সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়ে। সীমানা পেরোনোর সময় দাঙ্গার চরিত্র মুসলমান-বিরোধী থেকে বদলে হিন্দু-বিরোধী হয়ে যায়।
তাহলে দেখা যাচ্ছে, এক, সাহেবরা আসার আগে আসাম (বিশেষ করে ব্রহ্মপুত্র উপত্যকা) মূল ভূখন্ডের থেকে কিছুটা বিচ্ছিন্ন ছিল। আহোম রাজারা বিদেশি মানুষ ও পণ্যের ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিলেন। দুই, উপনিবেশি শাসনের সাথে প্রব্রজনের সম্পর্ক রয়েছে। তিন, বিভিন্ন সময়ে নানা কারণে বিভিন্ন অঞ্চল থেকে অভিবাসী মানুষ আসামে এসেছেন। এই স্রোত বহুদিন ধরে চলছে।
======================================================
ভূমিপুত্ররক্ষার রাজনীতিকে আসাম আন্দোলন প্রতিষ্ঠা করেছিল। এই রাজনীতিই কালে কালে বেড়ে অসমিয়া জাতীয়তাবাদকে দুর্বল করে দিয়েছে। এটা দুই ভাবে হয়েছে। একটা নিচ থেকে। বোড়ো, কার্বি ও অন্য জনজাতিগোষ্ঠীরা অসমিয়া জাতীয়তাবাদের আধিপত্যের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে। জনজাতিরা নিজেদের আলাদা স্বায়ত্বশাসিত অঞ্চল চালাচ্ছে। অন্য রাজ্যের দাবি উঠেছে। দ্বিতীয়টা ওপর থেকে। গত তিরিশ বছরে ভারতীয় রাজনীতিতে ভারতীয় জনতা পার্টি উঠে এসেছে। তিরিশ বছর আগে কে ভাবতে পেরেছিল অগপ বিজেপি-র ছোট শরিক হয়ে আসামে সরকার চালাবে? হিন্দুত্ববাদী রাজনীতিও এক ধরণের ভূমিপুত্র রাজনীতি। তবে এরা অসমিয়া জাতীয়তাবাদের থেকে অনেক বড় মাঠে খেলাধুলো করে। সর্বভারতীয় বিজেপি-র পেছনে তাবৎ বড় পুঁজির মালিকরা আছেন। সংঘের রাজনীতির উচ্চাকাঙ্খা অসমিয়া জাতীয়তাবাদীদের তুলনায় অনেক বেশি এবং সহিষ্ণুতা কম।
কিন্তু আসাম চুক্তির কী হল? কতজনকে শনাক্ত বা বহিষ্কার করা হল? ২০১২ সালের হিসেব বলছে ২,৪৪২ জন মানুষকে বহিষ্কার করা হয়েছে, আর ৫৪,০০০ মানুষকে বাংলাদেশি হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে। অথচ কথা তো হচ্ছিল ৪০ লক্ষ বিদেশির। আসলে বিদেশি ক'জন আছেন আসামে? এই নিয়ে ভাল গবেষণা নেই। লোকে ৪০ লক্ষ, ৫০ লক্ষ যা হোক একটা বলে দিচ্ছে। গত ১০০ বছরের জনসংখ্যা দেখলে বোঝা যায় ১৯৭১ সালের আগে পর্যন্ত আসামের জনসংখ্যা ভারতের থেকে বেশি হারে বেড়েছে। এর জন্য সম্ভবত পূর্ববঙ্গ থেকে, পূর্ব পাকিস্তান থেকে প্রব্রজন দায়ী। ১৯৭১-এর পরে ছবিটা পাল্টে যায়। দেখা যাচ্ছে ভারতের থেকে আসামের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কম। প্রব্রজনের স্রোত একেবারে গায়েব না হলেও নগণ্য হয়েছে অনুমান করা ভুল হবে না।
তাতে অবশ্য রাজনীতির ব্যাপারীদের কিছু এসে যায় না। "কম লোককে বিদেশি শনাক্ত করা হল, এটা কি আসাম চুক্তির বিফলতা নয়? ৮৫৫ শহিদের বলিদান কি জলে যাবে?" জাতীয়তাবাদীরা এই বলে মানুষকে তাতাচ্ছে। তবে জাতীয়তাবাদীদের আজকে অত ক্ষমতা নেই যে ফের রাজ্যজুড়ে আন্দোলন তৈরি করবে। তারা আইনি পথে ঝুঁকে পড়েছে। নাগরিকপঞ্জি এক মরিয়া চেষ্টা। বিদেশিদের বহিষ্কারের দাবি জানিয়ে সুপ্রীম কোর্টে মামলা হয়েছে। কোর্ট ২০১৪ সালে এনআরসি বা নাগরিকপঞ্জি নবীকরণের নির্দেশ দিয়েছে। গোটা রাজ্যের বাসিন্দাদের বৈধ নাগরিক হওয়ার প্রমাণ দিতে হবে। বংশবৃক্ষ দাখিল করে ১৯৫১ সালের নাগরিকপঞ্জিতে অন্তর্ভুক্ত লোকেদের সাথে বা ১৯৭১ সালের আগের ভোটার লিস্টের লোকেদের সাথে নিজের রক্তসম্পর্ক প্রমাণ করতে হবে।
কথা হল, রাজ্যে অবৈধ বিদেশি থাকলে প্রশাসন-পুলিশ-বিচার ব্যবস্থা তাদের ধরুক। নির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে মামলা করুক। সরকারের অপদার্থতার বোঝা সাধারণ মানুষের ঘাড়ে চাপানো হচ্ছে কেন? এরকম প্রশ্ন অনেকের মনেই উঠছে। এ যেন মাছ ধরার জন্য গোটা পুকুরের জল ছেঁচে ফেলার মত হঠকারিতা। রাজ্যে ক'জন বিদেশি বসবাসকারী আছেন তার কোনও বিশ্বাসযোগ্য হিসেব নেই। অন্তত এই কাজটা যদি গত ৩০ বছরে পুলিশ, গোয়েন্দা বিভাগের সাহায্যে মনোযোগ দিয়ে করা হত তাহলে বাংলাদেশি খেদানোর রাজনীতির দোকান এতদিনে বন্ধ হয়ে যেত। যেহেতু প্রামাণ্য তথ্য নেই, নেতারা আজব সব কথা বলে লোক খেপাচ্ছেন। আসামের বিজেপি-র এক সাংসদ বলেছেন গোটা দেশে পাঁচ কোটি বাংলাদেশি আছে, যা আদতে বাংলাদেশের জনসংখ্যার প্রায় এক-তৃতীয়াংশ! বিজেপি-র নেতারা গোটা দেশে এনআরসি-র দাবি করেছেন।