"একতরফা এই হত্যালীলাকে গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছিলেন ক্রিয়ার প্রতিক্রিয়া । গোধরার কামরায় ৫৮ জন করসেবক ও তাদের পরিবারের সদস্যদের পুড়িয়ে মারার জন্যেই সংখ্যালঘুদের আক্রান্ত হতে হয়েছে, মোদীর এই ঘোষণার সঙ্গে গলা মেলান কেন্দ্রের জাতীয় গণতান্ত্রিক জোট (এনডিএ) । মোদীর বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয় না । ঘটনার প্রায় এক মাস পরে প্রধানমন্ত্রী বাজপেয়ী গুজরাত এসে মোদীকে রাজধর্ম পালন করার নির্দেশ দেন । তারপরেই কিন্তু গোয়াই দলীয় সম্মেলনে তিনি বলেন মুসলিমদেরও অন্যদের সঙ্গে মানিয়ে চলার অভ্যাস করতে হবে । গোটা দুনিয়ায় যেখানেই মুসলিমরা বাস করে তারা কোথাও অন্য ধর্মের লোকদের সঙ্গে বনিয়ে থাকতে পারে না ।"
"সরকারের একজন শীর্ষস্থানীয় মন্ত্রী হরেন পান্ডিয়া তাঁর নির্বাচনের প্রাক্কালে অঙ্গীকার করেছিলেন যে তাঁর এলাকাকে তিনি মুসলমান শূন্য করবেন ।"
"সংঘের মতাদর্শে, রাজনৈতিক লেখা ও ভাষণে, শাখার সব "সাংস্কৃতিক" কার্যকলাপে দুটি ব্যাপারের ওপর সর্বদা জোর দেওয়া হয়েছে - এক হল মুসলমানদের ভারতে আগমনের প্রথম দিন থেকে হিন্দুনারীদের উপর অত্যাচারের বিচিত্র কাল্পনিক বা অতিরঞ্জিত উপাখ্যান । অন্যটি হল মুসলমান জনসংখ্যার প্রবর্ধমান হারের তেমনই অতিরঞ্জিত কাল্পনিক পরিসংখ্যান, ভারতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সংখ্যাগরিষ্ঠতার সম্ভাবনা । এই দুই আখ্যানকে ভিত্তি করে গড়ে তোলা হয়েছে এক আকাশচুম্বী প্রতিশোধমূলক মনোভাব, এক সর্বাত্মক হিংসাধর্মী আশঙ্কা ।
এর পরিনাম আমরা গুজরাতে দেখেছি । 'প্রতিশোধের' পিপাসায় মুসলমান মেয়েদের প্রবীণা থেকে তিন বছরের শিশু পর্যন্ত বেধড়ক পেটানো হয়েছে, তাদের গণধর্ষণ ও বহু ধর্ষণ করা হয়েছে, তাদের কোলের শিশুদের ছিনিয়ে নিয়ে চোখের সামনে টুকরো টুকরো করে কেটে ফেলে আগুনে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে । অথবা শিশুদের পেট্রল খাইয়ে গায়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে মায়ের সামনে । তারপর মাকে ধর্ষণ করে পেট চিরে গর্ভস্থ অজাত শিশুকে বার করে ছিন্নভিন্ন করে অগ্নিদগ্ধ করা হয়েছে । ধর্ষিত, মৃত মহিলাদের জরায়ু নষ্ট করা হয়েছে তারপর প্রজনন স্থানে অত্যাচার করা হয়েছে, রাস্তায় রাস্তায় নগ্ন করে হাঁটানো হয়েছে । সবশেষে তাঁদের আগুনে ফেলে ভস্মীভূত করা হয়েছে যাতে ধ্বংসের কোন চিহ্ন না থাকে । আর যাতে মুসলমানদের অন্তিম ধর্মানুষ্ঠান - কাফন-কবর- পালন না করে হিন্দুমতে শবদাহ করা যায় ।
এ অত্যাচার সাময়িক পাগলামি নয়, এর বিশেষ উদ্দেশ্য আছে । নারীদেহ ভবিষ্যত প্রজন্মের আধার, সেই আধার অত্যাচার করে নষ্ট করে মুসলমানদের ভবিষ্যতকেই ভস্মীভূত করা হচ্ছে - শুধু প্রতীকিভাবে নয়, আক্ষরিক অর্থে । লক্ষ্যণীয় যে, বিশেষ করে শরীরের প্রজননস্থানের ওপর অত্যাচার করা হয়েছে । আরও লক্ষ্যণীয় যে মায়ের সামনে শিশুকে হত্যা করা হয়েছে ব্যাপকভাবে । অর্থাৎ, এই প্রজন্ম থেকে শুরু করে ভ্রুণ পর্যন্ত, জীবিত বা অজাত সমস্ত মুসলমানের জীবন ও জীবনের সম্ভাবনা পর্যন্ত নষ্ট করা হয়েছে । জাতিবিলোপের উপাখ্যানে এধরনের ব্যাপক পরিকল্পনার নজির বিরল । ...
.... ফ্যাসিবাদের একটা সুবিধা হল যে তা এতই ভয়ঙ্কর এক সত্য যে তাকে সময় থাকতে বিশ্বাস করতে কেউ চায় না । যখন সে সত্য সকলের কাছে একেবারেই প্রকট হয়ে ওঠে তখন তার হাতে আর সময় থাকে না ।"
"১৯৮৪-এর দিল্লি ও ভারতের অন্যান্য শিখ নিধন পর্বও বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ও বজরং দলের পাশে ম্লান । কেন ? সে দাঙ্গায় পূর্ব পরিকল্পিত ছক ছিল না । কংগ্রেসের কিছু সাংসদ (বলরাম ভগত) ও বিধায়ক ললিত মাকেনের বিরুদ্ধে দাঙ্গায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ থাকলেও, প্রশাসনের বিলম্বিত প্রতিক্রিয়া সত্ত্বেও কোন মতেই বলা যাবে না শিখ নিধন পর্ব প্রচ্ছন্ন সরকারি মদতে হয়েছে । যেমনটি হয়েছে গুজরাতে ।
"বম্বের প্রাক্তন পুলিশ প্রধান গুজরাতের অনুসন্ধানী দলের সদস্য হিসেবে তদন্ত করে যে তথ্য সংগ্রহ করেছেন তা প্রশাসনিক ষড়যন্ত্রকারীদের সহায়ক ভূমিকা স্পষ্ট করে দেয় । টাইমস অফ ইন্ডিয়ার বিশেষ নিবন্ধে (২৪.৪.০২) তিনি লিখেছেন - "রাজ্য সরকার হত্যালীলার নীরব দর্শকই শুধু ছিল না তারা এই ঘটনা ঘটতে দিয়েছে । তারা দাঙ্গাকারীদের প্ররোচিত করেছে, উত্সাহ দিয়েছে এবং ধ্বংসলীলায় অংশ নিয়েছে । পুলিশ তাদের চাপের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে ।"
এর পরে তিনি লিখেছেন "একজন মন্ত্রী আমেদাবাদ শহরের পুলিশ কমিশনারের কন্ট্রোলরুমে বসে থেকে হুকুম দিতে থাকেন । আর এক মন্ত্রী রাজ্য পুলিশের ডিরেক্টর জেনারেলের কন্ট্রোলরুমে ঢোকেন । এবং পুলিশ তাদের নির্দেশ মত কাজ করতে থাকে । পুলিশের এই সার্বিক আত্মসমর্পণ গোটা আই পি এস শ্রেণীর পক্ষে এক কলঙ্ক হয়ে রইল । যার দাগ সহজে মুছবে না । গুজরাত নিঃসন্দেহে পুলিশ বাহিনীর রাজনৈতিক দলের ক্রীড়নক হওয়ার নিকৃষ্ট উদাহরণ ।" ....
.... গোধরার ঘটনাকে সামনে শিখন্ডী করে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ও বজরং দোল যে বর্বর সাম্প্রদায়িক আক্রমণ চালিয়েছে তা হঠাৎ ঘটে যাওয়া ঘটনার প্রতিশোধ নয় । বেশ কিছুদিন ধরেই সংঘ পরিবার সগর্বে বলে আসছে গুজরাত হল হিন্দুত্ব নির্মাণের পরীক্ষাগার । ... "
"দেখা যাক আর এস এস-এর দ্বিতীয় সরসঞ্চালক, এম এস গোলওয়ালকর কি বলেন । we or our nationhood defined গ্রন্থে (১৯৩৯) তিনি লেখেন, হিন্দুস্তানে, বিদেশী জাতিদের বসবাস করতে গেলে হয় তাদের হিন্দু সংস্কৃতি, ভাষা এবং ধর্মকে জানতে হবে, শ্রদ্ধা করতে হবে ... এককথায় হয় নিজেদের স্বতন্ত্র অস্তিত্বকে চিন্হিত করে হিন্দু জাতির মধ্যে মিশে যেতে হবে, নয় হিন্দু জাতির অধীনে অবদমিত হয়ে থাকতে হবে । তারা কোনো বিশেষ সুযোগ সুবিধা ... এমনকী নাগরিক অধিকার দাবী করতে বা আশা করতে পারবে না ।"
"দেশের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন সংঘই তাঁর আত্মা । দেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর নিজের নির্বাচনী কেন্দ্রে (গান্ধীনগর, আহমেদাবাদ) নারকীয় হত্যাকান্ডের পরও তিনি গুজরাতের আইন-শৃঙ্খলার প্রশংসা করেছেন । দেশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী কবুল করেছেন সংখ্যালঘু হত্যা ও ধর্ষণ তো হয়েই থাকে । বিশ্ব হিন্দু পরিষদ, বজরং দল তথা সংঘ পরিবারের বড়, মেজ, সেজ নানা শাখার প্রতিনিধিদের ঠাঁই মিলেছে লোকসভায়, গুজরাত বিধানসভায়, কেন্দ্রীয় বা রাজ্য ক্যাবিনেটে । প্রশাসনের বা আমলাতন্ত্রের প্রতিটি স্তরে হয় সংঘপন্থীদের প্রাধান্য নয়তো সংঘের নিয়ন্ত্রণ চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে । অন্যদিকে কংগ্রেস বা যুক্তফ্রন্ট আমলে মুসলিম সাম্প্রদায়িকতাবাদীরা কখনই এরকম ক্ষমতা হাতে পায়নি ।"
"সর্বোচ্চ স্তর পর্যন্ত কংগ্রেসের নেতারা ১৯৮৪-র জন্য শিখদের কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন । ধরে নিলাম সেটা ভোটের জন্য ভন্ডামি, কিন্তু সংঘের নেতারা সেটুকু ভন্ডামি করার দরকার বোধ করছেন না । উত্তরপ্রদেশে ভোটের আগে বাজপেয়ী দৃপ্তকন্ঠে বলেছিলেন, আমাদের মুসলিম ভোট চাই না । গোয়াতে গলার স্বর আরেকটু ওপরে তুলে সমস্ত হিংসার জন্য মুসলমানদের দায়ী করেছিলেন । "
"সরকারের একজন শীর্ষস্থানীয় মন্ত্রী হরেন পান্ডিয়া তাঁর নির্বাচনের প্রাক্কালে অঙ্গীকার করেছিলেন যে তাঁর এলাকাকে তিনি মুসলমান শূন্য করবেন ।"
"সংঘের মতাদর্শে, রাজনৈতিক লেখা ও ভাষণে, শাখার সব "সাংস্কৃতিক" কার্যকলাপে দুটি ব্যাপারের ওপর সর্বদা জোর দেওয়া হয়েছে - এক হল মুসলমানদের ভারতে আগমনের প্রথম দিন থেকে হিন্দুনারীদের উপর অত্যাচারের বিচিত্র কাল্পনিক বা অতিরঞ্জিত উপাখ্যান । অন্যটি হল মুসলমান জনসংখ্যার প্রবর্ধমান হারের তেমনই অতিরঞ্জিত কাল্পনিক পরিসংখ্যান, ভারতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সংখ্যাগরিষ্ঠতার সম্ভাবনা । এই দুই আখ্যানকে ভিত্তি করে গড়ে তোলা হয়েছে এক আকাশচুম্বী প্রতিশোধমূলক মনোভাব, এক সর্বাত্মক হিংসাধর্মী আশঙ্কা ।
এর পরিনাম আমরা গুজরাতে দেখেছি । 'প্রতিশোধের' পিপাসায় মুসলমান মেয়েদের প্রবীণা থেকে তিন বছরের শিশু পর্যন্ত বেধড়ক পেটানো হয়েছে, তাদের গণধর্ষণ ও বহু ধর্ষণ করা হয়েছে, তাদের কোলের শিশুদের ছিনিয়ে নিয়ে চোখের সামনে টুকরো টুকরো করে কেটে ফেলে আগুনে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে । অথবা শিশুদের পেট্রল খাইয়ে গায়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে মায়ের সামনে । তারপর মাকে ধর্ষণ করে পেট চিরে গর্ভস্থ অজাত শিশুকে বার করে ছিন্নভিন্ন করে অগ্নিদগ্ধ করা হয়েছে । ধর্ষিত, মৃত মহিলাদের জরায়ু নষ্ট করা হয়েছে তারপর প্রজনন স্থানে অত্যাচার করা হয়েছে, রাস্তায় রাস্তায় নগ্ন করে হাঁটানো হয়েছে । সবশেষে তাঁদের আগুনে ফেলে ভস্মীভূত করা হয়েছে যাতে ধ্বংসের কোন চিহ্ন না থাকে । আর যাতে মুসলমানদের অন্তিম ধর্মানুষ্ঠান - কাফন-কবর- পালন না করে হিন্দুমতে শবদাহ করা যায় ।
এ অত্যাচার সাময়িক পাগলামি নয়, এর বিশেষ উদ্দেশ্য আছে । নারীদেহ ভবিষ্যত প্রজন্মের আধার, সেই আধার অত্যাচার করে নষ্ট করে মুসলমানদের ভবিষ্যতকেই ভস্মীভূত করা হচ্ছে - শুধু প্রতীকিভাবে নয়, আক্ষরিক অর্থে । লক্ষ্যণীয় যে, বিশেষ করে শরীরের প্রজননস্থানের ওপর অত্যাচার করা হয়েছে । আরও লক্ষ্যণীয় যে মায়ের সামনে শিশুকে হত্যা করা হয়েছে ব্যাপকভাবে । অর্থাৎ, এই প্রজন্ম থেকে শুরু করে ভ্রুণ পর্যন্ত, জীবিত বা অজাত সমস্ত মুসলমানের জীবন ও জীবনের সম্ভাবনা পর্যন্ত নষ্ট করা হয়েছে । জাতিবিলোপের উপাখ্যানে এধরনের ব্যাপক পরিকল্পনার নজির বিরল । ...
.... ফ্যাসিবাদের একটা সুবিধা হল যে তা এতই ভয়ঙ্কর এক সত্য যে তাকে সময় থাকতে বিশ্বাস করতে কেউ চায় না । যখন সে সত্য সকলের কাছে একেবারেই প্রকট হয়ে ওঠে তখন তার হাতে আর সময় থাকে না ।"
"১৯৮৪-এর দিল্লি ও ভারতের অন্যান্য শিখ নিধন পর্বও বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ও বজরং দলের পাশে ম্লান । কেন ? সে দাঙ্গায় পূর্ব পরিকল্পিত ছক ছিল না । কংগ্রেসের কিছু সাংসদ (বলরাম ভগত) ও বিধায়ক ললিত মাকেনের বিরুদ্ধে দাঙ্গায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ থাকলেও, প্রশাসনের বিলম্বিত প্রতিক্রিয়া সত্ত্বেও কোন মতেই বলা যাবে না শিখ নিধন পর্ব প্রচ্ছন্ন সরকারি মদতে হয়েছে । যেমনটি হয়েছে গুজরাতে ।
"বম্বের প্রাক্তন পুলিশ প্রধান গুজরাতের অনুসন্ধানী দলের সদস্য হিসেবে তদন্ত করে যে তথ্য সংগ্রহ করেছেন তা প্রশাসনিক ষড়যন্ত্রকারীদের সহায়ক ভূমিকা স্পষ্ট করে দেয় । টাইমস অফ ইন্ডিয়ার বিশেষ নিবন্ধে (২৪.৪.০২) তিনি লিখেছেন - "রাজ্য সরকার হত্যালীলার নীরব দর্শকই শুধু ছিল না তারা এই ঘটনা ঘটতে দিয়েছে । তারা দাঙ্গাকারীদের প্ররোচিত করেছে, উত্সাহ দিয়েছে এবং ধ্বংসলীলায় অংশ নিয়েছে । পুলিশ তাদের চাপের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে ।"
এর পরে তিনি লিখেছেন "একজন মন্ত্রী আমেদাবাদ শহরের পুলিশ কমিশনারের কন্ট্রোলরুমে বসে থেকে হুকুম দিতে থাকেন । আর এক মন্ত্রী রাজ্য পুলিশের ডিরেক্টর জেনারেলের কন্ট্রোলরুমে ঢোকেন । এবং পুলিশ তাদের নির্দেশ মত কাজ করতে থাকে । পুলিশের এই সার্বিক আত্মসমর্পণ গোটা আই পি এস শ্রেণীর পক্ষে এক কলঙ্ক হয়ে রইল । যার দাগ সহজে মুছবে না । গুজরাত নিঃসন্দেহে পুলিশ বাহিনীর রাজনৈতিক দলের ক্রীড়নক হওয়ার নিকৃষ্ট উদাহরণ ।" ....
.... গোধরার ঘটনাকে সামনে শিখন্ডী করে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ও বজরং দোল যে বর্বর সাম্প্রদায়িক আক্রমণ চালিয়েছে তা হঠাৎ ঘটে যাওয়া ঘটনার প্রতিশোধ নয় । বেশ কিছুদিন ধরেই সংঘ পরিবার সগর্বে বলে আসছে গুজরাত হল হিন্দুত্ব নির্মাণের পরীক্ষাগার । ... "
"দেখা যাক আর এস এস-এর দ্বিতীয় সরসঞ্চালক, এম এস গোলওয়ালকর কি বলেন । we or our nationhood defined গ্রন্থে (১৯৩৯) তিনি লেখেন, হিন্দুস্তানে, বিদেশী জাতিদের বসবাস করতে গেলে হয় তাদের হিন্দু সংস্কৃতি, ভাষা এবং ধর্মকে জানতে হবে, শ্রদ্ধা করতে হবে ... এককথায় হয় নিজেদের স্বতন্ত্র অস্তিত্বকে চিন্হিত করে হিন্দু জাতির মধ্যে মিশে যেতে হবে, নয় হিন্দু জাতির অধীনে অবদমিত হয়ে থাকতে হবে । তারা কোনো বিশেষ সুযোগ সুবিধা ... এমনকী নাগরিক অধিকার দাবী করতে বা আশা করতে পারবে না ।"
"দেশের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন সংঘই তাঁর আত্মা । দেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর নিজের নির্বাচনী কেন্দ্রে (গান্ধীনগর, আহমেদাবাদ) নারকীয় হত্যাকান্ডের পরও তিনি গুজরাতের আইন-শৃঙ্খলার প্রশংসা করেছেন । দেশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী কবুল করেছেন সংখ্যালঘু হত্যা ও ধর্ষণ তো হয়েই থাকে । বিশ্ব হিন্দু পরিষদ, বজরং দল তথা সংঘ পরিবারের বড়, মেজ, সেজ নানা শাখার প্রতিনিধিদের ঠাঁই মিলেছে লোকসভায়, গুজরাত বিধানসভায়, কেন্দ্রীয় বা রাজ্য ক্যাবিনেটে । প্রশাসনের বা আমলাতন্ত্রের প্রতিটি স্তরে হয় সংঘপন্থীদের প্রাধান্য নয়তো সংঘের নিয়ন্ত্রণ চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে । অন্যদিকে কংগ্রেস বা যুক্তফ্রন্ট আমলে মুসলিম সাম্প্রদায়িকতাবাদীরা কখনই এরকম ক্ষমতা হাতে পায়নি ।"
"সর্বোচ্চ স্তর পর্যন্ত কংগ্রেসের নেতারা ১৯৮৪-র জন্য শিখদের কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন । ধরে নিলাম সেটা ভোটের জন্য ভন্ডামি, কিন্তু সংঘের নেতারা সেটুকু ভন্ডামি করার দরকার বোধ করছেন না । উত্তরপ্রদেশে ভোটের আগে বাজপেয়ী দৃপ্তকন্ঠে বলেছিলেন, আমাদের মুসলিম ভোট চাই না । গোয়াতে গলার স্বর আরেকটু ওপরে তুলে সমস্ত হিংসার জন্য মুসলমানদের দায়ী করেছিলেন । "
No comments:
Post a Comment