"আমরা জাত-টাত জানিনে, শ্রেণী জানিনে । আমরা শুধু জানি দোস্ত আর দুশমন । সারা দুনিয়ার যত শ্রমিক সবাই আমাদের বন্ধু; আর বড়লোক আর সরকারের দল আমাদের শত্রু ।"
"দেখুন, বয়স কম বেশি নিয়ে কথা নয় । ওসব কথা ছাড়ুন । মোদ্দা কথা - কার চিন্তাধারা ঠিক --"
"ঠাকুরের দিকে তাকিয়ে থাকলেই ঠাকুর হওয়া যায় না ।"
"যত কম জানা যায় ততোই মনের শান্তি । কথাটা শুনতে খারাপ শোনায় না । কিন্তু এসব হচ্ছে আয়েশীদের কথা । এসব কথা বলে ওরা আত্মাকে বেঁধে রাখতে চায় এবং কথাগুলোকে ওরা ধরাবাঁধা রাস্তায় চলবার যুক্তি হিসেবে খাড়া করে ।"
"নিজের হাতের লাঠি পিঠে পড়লে ব্যথাটা একটু কমই বাজে ।"
"জীবন তো ঘোড়া নয় হে যে চাবুক কষে ছুটানো যাবে ।"
"প্রানের মধ্যে আগুনটা ভালো করে জ্বলবার আগে খানিকটা ধোঁয়া-কালি তো হবেই ।"
"বুর্জোয়া নাম ঠিক রেখেছিল ফরাসীরা । ওরা সত্যিই বুর -- বুর মানে জংলী, অসভ্য, হিংস্র জানোয়ারের মতো । মানুষের অজ্ঞানতার সুযোগ নিয়ে ওদের রক্ত শোষণ করে .."
"এর নাম ভালোবাসা, নয়, পায়ের বেড়ি !"
"মেয়েরা ভারী কাঁদতে ভালবাসে ! ওরা সুখেও কাঁদে, দুঃখেও কাঁদে ।"
"কখনও কখনও এগিয়ে যাবার জন্য নিজের বিরুদ্ধে যেতে হয় ।"
"একটা গোটা মানবতার টুঁটি টিপে মেরে তার আত্মাকে বিকৃত বিকল করে ছেড়ে দেওয়া ? ওরা কি সত্যি নিজেদের জন্য করে এই জঘন্য কাজ --- না মোটেই নয় । করে ওদের পুঁজি আগলাবার জন্য । বাইরের দৌলত রক্ষার জন্য, আত্মার দৌলতের জন্য নয় ।"
"অত সব পৃথিবীর খবর জেনে চাষাভুষোরা কি করবে । চাষীর হাত থেকে জমিগুলো বেমালুম উড়ে গেল কি করে, তার হদিসটা পেলেই হলো । জমিদার ব্যাটারা চোখের ওপর দিয়ে কেমন করে চুরি করল ! য়্যা ? দুনিয়াটা ঘুরছে না দাঁড়িয়ে আছে তা জেনে কোন ইষ্টিটা লাভ হবে ! আমাদের ফসল নিয়ে কথা । তারপর দুনিয়াটা আসমান থেকে লটকে থাক আর হেঁট মাথা করে বাদুড়-ঝোলাই ঝুলুক, তা আমাদের কি !"
"বন্ধুগণ ! আপনারা শোনেন দুনিয়ায় ইহুদী, জার্মান, ইংরেজ, তাতার এমনি বহু জাতির বাস । কিন্তু আমি তা বিশ্বাস করি না । মাত্র দুটি জাতের মানুষ সারা সংসারে -- ধনী আর গরিব । জলে তেলে যেমন মিশ খায় না, এরাও তেমনি মিশ খেতে পারে না । হ্যাঁ ঠিক, আলাদা আলাদা মানুষের পোশাক আলাদা, কথা কয় তারা আলাদা ভাষায় । কিন্তু তাকিয়ে দেখুন দেখি একবার বড়লোক ফরাসী জার্মান ইংরেজরা তাদের দেশের মেহনতী মানুষের সাথে কেমন ব্যবহারটা করে ! তাহলে বুঝবেন যে আমাদের মেহনতী মানুষদের বেলায় সব দেশের বড়লোকরাই এক । সব..."
"আশায়ই বেঁচে থাকে মানুষ । সেই আশায় যদি না রইল, তাহলে কি নিয়ে সে বাঁচবে !"
"ছবিতে, বইয়ে, আরও নানাভাবে যতটা জেনেছে, পড়েছে, সর্বত্র দেখেছে যিশুখ্রিষ্টকে - অতি সাধারণ বেশেই রেখেছে - কারণ দীন-দুঃখীরই বন্ধু তিনি । কিন্তু গির্জায় গির্জায় সেই খ্রীষ্টেরই মূর্তি সোনা-জহরত, সিল্ক-সার্টিনে মোড়া । শান্তির আশায় ভিক্ষুকের দল সেই দুয়ারে যখন এসে দাঁড়ায়, তার অঙ্গের জলুস যেন লাজে ম্লান হয়ে যায় ।"
"মরণ আছে বলেই তো জীবনের এত স্বাদ !"
"সুখ অল্পই ভালো । বেশি হলেই সস্তা হয়ে যায় । কিন্তু মুশকিল অল্পে কারোই যে সুখং নাস্তি !"
"হেতের নেই, অস্ত্র নেই, নিরীহ মানুষ, শুধু দুটো মুখের কথা সম্বল, তাদের এত ভয় ?"
"মাতৃধর্মের কাছে মানবধর্ম হার মানে । মাতৃ স্নেহের সুক্ষ্ম পাবকশিখায় পুড়ে যায় মানব-ধর্ম । আনন্দকে গ্রাস করে ভয় । একটি চিন্তা সবার সবার ওপর দিয়ে জেগে থাকে : 'মরবে পাভেল .... মরবে...।' "
"চাষীভাইরা, চোখ খুলে দেখ, কি আমাদের জীবন । বুঝতে পারছ না, কেমন করে ওরা আমাদের সব ঠকিয়ে, লুটে নিয়ে, রক্ত শুষে ফোঁপরা করে ছেড়ে দিচ্ছে ! দুনিয়ার যা কিছু সব তোমাদেরই দৌলতে ... দুনিয়ার সবচেয়ে বড় শক্তি তোমরা ... কিন্তু কতটুকু হক আছে তোমাদের ? হ্যাঁ আছে --- না খেয়ে তিলে তিলে পেট শুকিয়ে মরার হক আছে !"
"নিজের পানে একবার চাও তো ! কি আছে খোয়াবার ?"
"এক এক সময় পন্ডিতের চেয়ে মুখ্যু লোকেরাই বোঝে বেশি তার ওপরে যদি লেখাপড়া জানা বাবুদের পেটটি ভরা থাকল তো কথাই নেই ।"
"এই পশুসুলভ সমাজ ব্যবস্থায় বাধ্য হয়েই মানুষকে জানোয়ার হতে হয় ।"
"পারিবারিক জীবন বিপ্লবীদের সয় না । অভাব, অনটন, ছেলেপুলে হলে তারা কি খাবে সেই চিন্তাই খেয়ে ফেলে । সমস্ত কর্ম শক্তি এতেই বরবাদ । ... অথচ শক্তি বাড়ানোই দরকার, যাতে ক্রমশ নিজেকে চড়িয়ে দিতে পারে । এ যেন যুগেরই দাবি । সবার চেয়ে আগে আগে আমাদের চলতে হবে, কারণ আমরা শ্রমিক -- পুরনো পৃথিবীটাকে ভেঙে নতুন পৃথিবীর পত্তন করার কাজে আমাদের ডাক পড়েছে, ইতিহাসের বরণ-মালা পড়েছে আমাদের কন্ঠে । আমরা অলস হয়ে, বা সামান্য একটু পেয়ে অনেক পেলাম বলে আত্ম-তৃপ্ত হয়ে যদি পেছনে পড়ে থাকি তবে মস্ত ভুল করব -- এবং সে ভুল আদর্শের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতার সামিল হবে । আদর্শের হানি না ঘটিয়ে সাথে কাঁধ মিলিয়ে চলতে পারি, এমন তো দেখিনে কাউকে । ক্ষুদ্র লাভ আমাদের নয় - আমাদের লক্ষ্য পূর্ণ বিজয়, একথা ভুললে চলবে না আমাদের ।"
"কি অপরাধ করেছি যে স্বীকার করব ? খুন করিনি, চুরি ডাকাতি করিনি । যে অবস্থায় পড়ে মানুষ চুরি-ডাকাতি করতে বাধ্য হচ্ছে , ভাইয়ে ভাইয়ে হানাহানি করছে, সেই হীন অবস্থাটাকে মেনে নিতে অস্বীকার করেছি । এই কি অপরাধ ?"
"কচি পরাণেই সত্যকে তাড়াতাড়ি চেনা যায় গো !..."
"তুমি আমায় অপমান করলে - তোমার চোয়াল তাক করে মারলুম এক ঘুষি, ব্যস ! তারপর তুমিই বিচারে বস, তাহলে আমার দোষ কাহন তো হবেই । কিন্তু বাপুহে প্রথম দোষখানা কার ? তোমার !"
"কে কি করল তাই নিয়ে ওদের যত মাথাব্যথা । কিন্তু কৈ, কেন করল সেদিক পানে তো তাকিয়ে দেখিস না তোরা !"
"আমরা সমাজতন্ত্রী । অর্থাৎ আমরা ব্যক্তিগত মালিকানার বিরোধী । এই ব্যক্তিগত মালিকানা আছে বলেই সমাজ ভেঙে পড়েছে, মানুষে মানুষে চলছে হানাহানি ও অবিরাম স্বার্থ-সংঘাত । আর এই সংঘাতকে চাপা দেবার জন্যে বা এই সংঘাতের সমর্থনে ব্যক্তিগত মালিকানা মিথ্যার আশ্রয় নেয় আর মানুষকে টেনে নামে প্রতারণা ভন্ডামি আর বিদ্বেষের পক্ষে ।"
"...আমরা শ্রমিক; শিশুর খেলনা থেকে আরম্ভ করে, বড় বড় কলকারখানা সব আমাদেরই মেহনতে তৈরি । অথচ মানুষ হিসাবে আমাদের কোন মূল্য নেই ।"
"জুলুমের হাত থেকে আত্মরক্ষার অধিকার আমার আছে বৈকি ।"
"মানুষ মেহনত করে মরে; তার বদলে পায় কি ? না --- অভাব, অনটন, ক্ষিদে, রোগ ! চিরকালে ধরা-বাঁধা মজুরি । সব কিছু আমাদের বিরুদ্ধে । দিনের পর দিন শেষ রক্তের ফোঁটা অবধি দিয়ে খাটি --- আর থাকি আঁস্তাকুড়ে পড়ে । ওরা আমাদের বোকা মুখ্যু করে রেখে দেয় । আমাদেরই মেহনতের ফল ভোগ করে অন্যে । আর আমরা গলায় শেকল-বাঁধা কুকুরের মতো থাকি ওদের হাতের মুঠোয় । আমরা কিছু জানি না, বুঝিনা -- কেবল ভয়ে ভয়ে আড়ষ্ট হয়ে থাকি । ভয় করিনে হেন জিনিস নেই । আমাদের জীবনটা একটা আস্ত আঁধার রাত --- আর কিছুই না ।"
"কিছুতেই ভয় পেওনা । আর বেশি ভয়ঙ্কর কি আছে বলতো যে অবস্থায় জীবন কাটাচ্ছ তার চাইতে ..."
"দেখুন, বয়স কম বেশি নিয়ে কথা নয় । ওসব কথা ছাড়ুন । মোদ্দা কথা - কার চিন্তাধারা ঠিক --"
"ঠাকুরের দিকে তাকিয়ে থাকলেই ঠাকুর হওয়া যায় না ।"
"যত কম জানা যায় ততোই মনের শান্তি । কথাটা শুনতে খারাপ শোনায় না । কিন্তু এসব হচ্ছে আয়েশীদের কথা । এসব কথা বলে ওরা আত্মাকে বেঁধে রাখতে চায় এবং কথাগুলোকে ওরা ধরাবাঁধা রাস্তায় চলবার যুক্তি হিসেবে খাড়া করে ।"
"নিজের হাতের লাঠি পিঠে পড়লে ব্যথাটা একটু কমই বাজে ।"
"জীবন তো ঘোড়া নয় হে যে চাবুক কষে ছুটানো যাবে ।"
"প্রানের মধ্যে আগুনটা ভালো করে জ্বলবার আগে খানিকটা ধোঁয়া-কালি তো হবেই ।"
"বুর্জোয়া নাম ঠিক রেখেছিল ফরাসীরা । ওরা সত্যিই বুর -- বুর মানে জংলী, অসভ্য, হিংস্র জানোয়ারের মতো । মানুষের অজ্ঞানতার সুযোগ নিয়ে ওদের রক্ত শোষণ করে .."
"এর নাম ভালোবাসা, নয়, পায়ের বেড়ি !"
"মেয়েরা ভারী কাঁদতে ভালবাসে ! ওরা সুখেও কাঁদে, দুঃখেও কাঁদে ।"
"কখনও কখনও এগিয়ে যাবার জন্য নিজের বিরুদ্ধে যেতে হয় ।"
"একটা গোটা মানবতার টুঁটি টিপে মেরে তার আত্মাকে বিকৃত বিকল করে ছেড়ে দেওয়া ? ওরা কি সত্যি নিজেদের জন্য করে এই জঘন্য কাজ --- না মোটেই নয় । করে ওদের পুঁজি আগলাবার জন্য । বাইরের দৌলত রক্ষার জন্য, আত্মার দৌলতের জন্য নয় ।"
"অত সব পৃথিবীর খবর জেনে চাষাভুষোরা কি করবে । চাষীর হাত থেকে জমিগুলো বেমালুম উড়ে গেল কি করে, তার হদিসটা পেলেই হলো । জমিদার ব্যাটারা চোখের ওপর দিয়ে কেমন করে চুরি করল ! য়্যা ? দুনিয়াটা ঘুরছে না দাঁড়িয়ে আছে তা জেনে কোন ইষ্টিটা লাভ হবে ! আমাদের ফসল নিয়ে কথা । তারপর দুনিয়াটা আসমান থেকে লটকে থাক আর হেঁট মাথা করে বাদুড়-ঝোলাই ঝুলুক, তা আমাদের কি !"
"বন্ধুগণ ! আপনারা শোনেন দুনিয়ায় ইহুদী, জার্মান, ইংরেজ, তাতার এমনি বহু জাতির বাস । কিন্তু আমি তা বিশ্বাস করি না । মাত্র দুটি জাতের মানুষ সারা সংসারে -- ধনী আর গরিব । জলে তেলে যেমন মিশ খায় না, এরাও তেমনি মিশ খেতে পারে না । হ্যাঁ ঠিক, আলাদা আলাদা মানুষের পোশাক আলাদা, কথা কয় তারা আলাদা ভাষায় । কিন্তু তাকিয়ে দেখুন দেখি একবার বড়লোক ফরাসী জার্মান ইংরেজরা তাদের দেশের মেহনতী মানুষের সাথে কেমন ব্যবহারটা করে ! তাহলে বুঝবেন যে আমাদের মেহনতী মানুষদের বেলায় সব দেশের বড়লোকরাই এক । সব..."
"আশায়ই বেঁচে থাকে মানুষ । সেই আশায় যদি না রইল, তাহলে কি নিয়ে সে বাঁচবে !"
"ছবিতে, বইয়ে, আরও নানাভাবে যতটা জেনেছে, পড়েছে, সর্বত্র দেখেছে যিশুখ্রিষ্টকে - অতি সাধারণ বেশেই রেখেছে - কারণ দীন-দুঃখীরই বন্ধু তিনি । কিন্তু গির্জায় গির্জায় সেই খ্রীষ্টেরই মূর্তি সোনা-জহরত, সিল্ক-সার্টিনে মোড়া । শান্তির আশায় ভিক্ষুকের দল সেই দুয়ারে যখন এসে দাঁড়ায়, তার অঙ্গের জলুস যেন লাজে ম্লান হয়ে যায় ।"
"মরণ আছে বলেই তো জীবনের এত স্বাদ !"
"সুখ অল্পই ভালো । বেশি হলেই সস্তা হয়ে যায় । কিন্তু মুশকিল অল্পে কারোই যে সুখং নাস্তি !"
"হেতের নেই, অস্ত্র নেই, নিরীহ মানুষ, শুধু দুটো মুখের কথা সম্বল, তাদের এত ভয় ?"
"মাতৃধর্মের কাছে মানবধর্ম হার মানে । মাতৃ স্নেহের সুক্ষ্ম পাবকশিখায় পুড়ে যায় মানব-ধর্ম । আনন্দকে গ্রাস করে ভয় । একটি চিন্তা সবার সবার ওপর দিয়ে জেগে থাকে : 'মরবে পাভেল .... মরবে...।' "
"চাষীভাইরা, চোখ খুলে দেখ, কি আমাদের জীবন । বুঝতে পারছ না, কেমন করে ওরা আমাদের সব ঠকিয়ে, লুটে নিয়ে, রক্ত শুষে ফোঁপরা করে ছেড়ে দিচ্ছে ! দুনিয়ার যা কিছু সব তোমাদেরই দৌলতে ... দুনিয়ার সবচেয়ে বড় শক্তি তোমরা ... কিন্তু কতটুকু হক আছে তোমাদের ? হ্যাঁ আছে --- না খেয়ে তিলে তিলে পেট শুকিয়ে মরার হক আছে !"
"নিজের পানে একবার চাও তো ! কি আছে খোয়াবার ?"
"এক এক সময় পন্ডিতের চেয়ে মুখ্যু লোকেরাই বোঝে বেশি তার ওপরে যদি লেখাপড়া জানা বাবুদের পেটটি ভরা থাকল তো কথাই নেই ।"
"এই পশুসুলভ সমাজ ব্যবস্থায় বাধ্য হয়েই মানুষকে জানোয়ার হতে হয় ।"
"পারিবারিক জীবন বিপ্লবীদের সয় না । অভাব, অনটন, ছেলেপুলে হলে তারা কি খাবে সেই চিন্তাই খেয়ে ফেলে । সমস্ত কর্ম শক্তি এতেই বরবাদ । ... অথচ শক্তি বাড়ানোই দরকার, যাতে ক্রমশ নিজেকে চড়িয়ে দিতে পারে । এ যেন যুগেরই দাবি । সবার চেয়ে আগে আগে আমাদের চলতে হবে, কারণ আমরা শ্রমিক -- পুরনো পৃথিবীটাকে ভেঙে নতুন পৃথিবীর পত্তন করার কাজে আমাদের ডাক পড়েছে, ইতিহাসের বরণ-মালা পড়েছে আমাদের কন্ঠে । আমরা অলস হয়ে, বা সামান্য একটু পেয়ে অনেক পেলাম বলে আত্ম-তৃপ্ত হয়ে যদি পেছনে পড়ে থাকি তবে মস্ত ভুল করব -- এবং সে ভুল আদর্শের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতার সামিল হবে । আদর্শের হানি না ঘটিয়ে সাথে কাঁধ মিলিয়ে চলতে পারি, এমন তো দেখিনে কাউকে । ক্ষুদ্র লাভ আমাদের নয় - আমাদের লক্ষ্য পূর্ণ বিজয়, একথা ভুললে চলবে না আমাদের ।"
"কি অপরাধ করেছি যে স্বীকার করব ? খুন করিনি, চুরি ডাকাতি করিনি । যে অবস্থায় পড়ে মানুষ চুরি-ডাকাতি করতে বাধ্য হচ্ছে , ভাইয়ে ভাইয়ে হানাহানি করছে, সেই হীন অবস্থাটাকে মেনে নিতে অস্বীকার করেছি । এই কি অপরাধ ?"
"কচি পরাণেই সত্যকে তাড়াতাড়ি চেনা যায় গো !..."
"তুমি আমায় অপমান করলে - তোমার চোয়াল তাক করে মারলুম এক ঘুষি, ব্যস ! তারপর তুমিই বিচারে বস, তাহলে আমার দোষ কাহন তো হবেই । কিন্তু বাপুহে প্রথম দোষখানা কার ? তোমার !"
"কে কি করল তাই নিয়ে ওদের যত মাথাব্যথা । কিন্তু কৈ, কেন করল সেদিক পানে তো তাকিয়ে দেখিস না তোরা !"
"আমরা সমাজতন্ত্রী । অর্থাৎ আমরা ব্যক্তিগত মালিকানার বিরোধী । এই ব্যক্তিগত মালিকানা আছে বলেই সমাজ ভেঙে পড়েছে, মানুষে মানুষে চলছে হানাহানি ও অবিরাম স্বার্থ-সংঘাত । আর এই সংঘাতকে চাপা দেবার জন্যে বা এই সংঘাতের সমর্থনে ব্যক্তিগত মালিকানা মিথ্যার আশ্রয় নেয় আর মানুষকে টেনে নামে প্রতারণা ভন্ডামি আর বিদ্বেষের পক্ষে ।"
"...আমরা শ্রমিক; শিশুর খেলনা থেকে আরম্ভ করে, বড় বড় কলকারখানা সব আমাদেরই মেহনতে তৈরি । অথচ মানুষ হিসাবে আমাদের কোন মূল্য নেই ।"
"জুলুমের হাত থেকে আত্মরক্ষার অধিকার আমার আছে বৈকি ।"
"মানুষ মেহনত করে মরে; তার বদলে পায় কি ? না --- অভাব, অনটন, ক্ষিদে, রোগ ! চিরকালে ধরা-বাঁধা মজুরি । সব কিছু আমাদের বিরুদ্ধে । দিনের পর দিন শেষ রক্তের ফোঁটা অবধি দিয়ে খাটি --- আর থাকি আঁস্তাকুড়ে পড়ে । ওরা আমাদের বোকা মুখ্যু করে রেখে দেয় । আমাদেরই মেহনতের ফল ভোগ করে অন্যে । আর আমরা গলায় শেকল-বাঁধা কুকুরের মতো থাকি ওদের হাতের মুঠোয় । আমরা কিছু জানি না, বুঝিনা -- কেবল ভয়ে ভয়ে আড়ষ্ট হয়ে থাকি । ভয় করিনে হেন জিনিস নেই । আমাদের জীবনটা একটা আস্ত আঁধার রাত --- আর কিছুই না ।"
"কিছুতেই ভয় পেওনা । আর বেশি ভয়ঙ্কর কি আছে বলতো যে অবস্থায় জীবন কাটাচ্ছ তার চাইতে ..."
No comments:
Post a Comment