১৯৭৭ সালে ক্ষমতায় আসার ঠিক পরের বছরই পঞ্চায়েত নির্বাচন করে গ্রামের মানুষকে ক্ষমতায়নের পথে এগিয়ে দেওয়ার পথে চালিত করে বাম সরকার । এতে করে একদিকে যেমন কৃষকের ক্ষমতায়ন ও তাদের মর্যাদার আইনী স্বীকৃতি ঘটেছিল অন্যদিকে তেমনি কৃষকেরা জমিদার জোতদার-মহাজনী চক্রের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবার প্রতিষ্ঠানিক হাতিয়ার পেয়েছিলেন । গ্রাম বাংলায় ক্ষমতার কাঠামোর যেমন আমূল পরিবর্তন ঘটল তেমনি কৃষির উৎপাদন ক্রমান্বয়ে বাড়তে শুরু করল । ধান, গম, আলু, পাট, শস্য উৎপাদনে দেশের সামনের সারিতে উঠে আসে পশ্চিমবঙ্গ । একই সঙ্গে গ্রাম বাংলার সমাজ-অর্থনীতিতে মৌলিক রূপান্তর ঘটেছিল, অবশ্যই তা সমাজতান্ত্রিক নয়, তা ছিল কৃষিতে সামন্ততান্ত্রিক ব্যবস্থার অবসান ঘটিয়ে 'লাঙ্গল যার, জমি তার' নীতির আক্ষরিক বাস্তবায়নের মাধ্যমে গ্রাম বাংলাকে গণতান্ত্রিক ভিতের ওপর প্রতিষ্ঠিত করা । সারা দেশে কৃষি জমির মাত্র ৩% এই রাজ্যে, অথচ বন্টিত জমির ২০% এই রাজ্যে । কলকাতার বিভিন্ন টিভি চ্যানেলের আলোচনায় যাঁরা ৩৪ বছরকে এই রাজ্যের কৃষ্ণ গহ্বরে ঢুকে যাওয়ার কলঙ্কময় অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত করেন তাঁদের প্রতি সনির্বন্ধ অনুরোধ বামেদের আপনারা তুলোধোনা করুন, ওটাই আপনাদের কাজ তবে তথ্যগুলোকে আড়াল করবেন না, জানবেন আমাদের মতন অর্ধ ও স্বল্পশিক্ষিত লোকেরা আপনাদের আলোচনা থেকে আলোকিত হতে চেষ্টা করি । প্রসঙ্গত বলি কলকাতার একটি টিভি চ্যানেলের সঞ্চালক 'ঈশ্বর পরিত্যক্ত এই রাজ্যে', 'বামেদের রক্তক্ষরণ', 'বামেদের শীতঘুম', 'জুরাসিক যুগের তত্ত্ব', 'একবার ক্ষমতা থেকে চলে গেলে বামেরা আর ক্ষমতায় ফেরে না' প্রভৃতি শব্দবন্ধের মাধ্যমে বাম্পন্থাকে হেয় করে প্রচুর আনন্দ পান, সেটা পাওয়ার অধিকার তাঁর নিশ্চয়ই আছে, তবে আমার ছোট্ট অনুরোধ সঞ্চালকের আসনে থাকাকালীন তাঁর আপাত নিরপেক্ষতাটা যেন না হারান ।
==========================================================
তাত্ত্বিকভাবে মূল লক্ষ্যের প্রতি অবিচল থেকে বাস্তবোচিত নীতি গ্রহণই হল pragmatism ।
==========================================================
তাত্ত্বিকভাবে মূল লক্ষ্যের প্রতি অবিচল থেকে বাস্তবোচিত নীতি গ্রহণই হল pragmatism ।